আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারের দরকারি কয়েন গুলি যেগুলো খুচখাচ প্রয়োজনে সব সময় দরকার পরে সেগুলি নিয়ে সেভাবে কিছুই জানি না। আমরা সকলেই জানি আমাদের দেশের টাকা পয়সা ছবি রিসার্ভ ব্যাংক থেকে আসে। কিন্তু বিশেষ করে এই নানা রকমের সাইজের নানা প্রিন্টের কয়েন গুলি কিভাবে তৈরি হয় কখনও ভেবে দেখেছেন। কি মেটেরিয়াল দিয়েই বা তৈরি এই কয়েন? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
মূলত, স্বাধীনতার পর, ১৯৫০ সালে প্রথম ভারতীয় কয়েন তৈরি হয়। ইংরেজরা ১৭৫৭ সালে প্রথম ভারতের মুদ্রা চালু করে, যা কোর্সেটা শহরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দ্বারা তৈরি হত। কয়েন তৈরির ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রাচীনকালে মানুষ বার্টার সিস্টেম ব্যবহার করত। পরবর্তীতে তারা শেল, তারপর দামড়ি, ঢেলা, পয়ের মাধ্যমে লেনদেন শুরু করে।রাজা-মহারাজারা সোনার এবং রূপার কয়েন চালু করতেন।
এই কয়েন তৈরির প্রক্রিয়া বেশ জটিল। এটি শুরু হয় ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উত্তপ্ত একটি ভাট্টিতে আয়রন এবং স্টেইনলেস স্টিলের টুকরোগুলো পুড়িয়ে। এই ধাতুগুলো গলে গেলে সেগুলোকে মোল্ডে ঢেলে লম্বা লম্বা ছড় তৈরি করা হয়। এরপর এই ছড়গুলোকে রোলারের মধ্যে দিয়ে কুঁচিয়ে পাতলা পাত বানানো হয়। এরপর একটি বিশেষ মেশিন এই পাতগুলো থেকে গোলাকার এবং প্লেন কয়েন কাটে। এই মেশিন এক মিনিটে ৭২০টি কয়েন কাটতে পারে।
এই প্রক্রিয়ার পরে কয়েনগুলোকে মেটাল মেশিনের সাহায্যে পরিষ্কার করা হয় যাতে তারা আরও চকচকে হয়। এরপর কয়েনের উপর প্রয়োজনীয় ডিজাইন প্রিন্ট করা হয়। ডিজাইনটি গর্ভমেন্ট থেকে অনুমোদিত হলে, পাঞ্চিং মেশিনের সাহায্যে কয়েনের দুই পাশে ডিজাইন করা হয়।
এরপর তাদের মান পরীক্ষা করা হয়। এরপর কয়েনগুলো রিজার্ভ ব্যাংকে পাঠানো হয়, সেখান থেকে তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়। এই পুরো প্রক্রিয়া থেকে আমরা বুঝতে পারি, আমাদের পকেটে থাকা একটি সাধারণ কয়েন অনেক জটিল প্রক্রিয়া পেরিয়ে আসে।
এরকমই পাঁচ টাকার কয়েনেরও একটি গল্পঃ আছে। প্রথমে ভারতে মোটা পাঁচ টাকার কয়েন তৈরি হত, কিন্তু তা দেশের বাইরে চোরাচালান হওয়ার কারণে সরকার তা বন্ধ করে দেয়। মাফিয়ারা এই কয়েন গলিয়ে ব্লেড তৈরি করত, যা বিশাল মুনাফা দিত। এরপর সরকার পাঁচ টাকার কয়েনের ডিজাইন পরিবর্তন করে নতুন ধাতু দিয়ে তৈরি করে।
এভাবেই কালজয়ী হয়ে চলে আসছে একের পর এক সুন্দর সুন্দর কয়েন যা আমাদের ছোট খাটো প্রয়োজনে দিব্যি কাজে লেগে চলেছে।
[আরো পড়ুন:👉 নিত্য পূজা সামগ্রী হিসেবে সবার বড়িতেই কর্পূর থাকে। কিন্তু কিভাবে এটি তৈরী করা হয় আসুন জেনে নেওয়া যাক]
Leave a Reply