ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর তৃতীয় মেয়াদে ভারতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি সম্পূর্ণ নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করবেন এবং ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করার লক্ষ্যে অগ্রসর হবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই আত্মবিশ্বাসকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও সমর্থন করছে। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৭ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে জার্মানি এবং জাপানকে পেছনে ফেলে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল বলেছেন, ভারতের অর্থনীতি খুব শীঘ্রই চার ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এই পূর্বাভাস সত্যে পরিণত হওয়ার একটি বড় কারণ হলো ভারত বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন অর্থনীতির একটি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ছিল ৮.২ শতাংশ, যা এই বছর ৭ শতাংশেরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতের অর্থনৈতিক ইতিহাসে দেখা যায়, ১৯৯১ সালে উদারীকরণের পর এক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে প্রায় ১৭ বছর সময় লেগেছিল। এরপর দুই ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৭ বছর। ২০২১-২২ সালে ভারত তিন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হয়, যদিও করোনা মহামারীর কারণে এই সময়সীমা ৫ বছর থেকে বেড়ে ৭ বছর হয়েছিল। তবে এরপর ভারত চার ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে মাত্র ৩ বছরে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, এবং পরবর্তী ২ বছরে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে পৌঁছাবে।
তবে এই দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের সত্ত্বেও, ভারতের প্রতি ব্যক্তি আয়ের দিকে আরও মনোযোগ প্রয়োজন। বিশ্বের শীর্ষ দশ অর্থনীতির মধ্যে থাকা দেশগুলির তালিকায় ভারতের অবস্থান পঞ্চম হলেও, প্রতি ব্যক্তি আয়ে ভারত এখনও শীর্ষ দশে নেই। ফোর্বসের মতে, বিশ্বের শীর্ষ দশ অর্থনীতির দেশগুলির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম স্থানে রয়েছে ২৮.৭ ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপি নিয়ে এবং প্রতি ব্যক্তি আয় ৭১.০ লাখ ডলার। ভারতের জিডিপি ৩.৯৪ ট্রিলিয়ন ডলার হলেও, প্রতি ব্যক্তি আয় মাত্র ২.২৮ লাখ ডলার।
এনসিএইআর-এর একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতে দারিদ্র্যের হার দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ২০১১-১২ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২১ শতাংশ, যা বর্তমানে কমে ৮.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এই সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে যে, প্রজন্মের পর প্রজন্মে দারিদ্র্যের হারেও কমেছে। তবে এখনও কিছু উদ্বেগ রয়ে গেছে, কারণ অনেক মানুষ কোনো একটি দুর্যোগের কারণে আবার দারিদ্র্যে ফিরে যেতে পারেন।
ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতায় মানুষের আয় বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে আরও মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভারত এগিয়ে চলেছে বিকাশিত ভারতের পথে।
[আরো পড়ুন:👉ভারতের ইউনিয়ন বাজেট: প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার প্রক্রিয়া]
Leave a Reply