A doctor conducting a medical examination on a woman in a hospital room.

যদি কোনো Rh নেগেটিভ মা Rh পজিটিভ শিশুর জন্ম দেন! পরবর্তীতে কী সমস্যা হতে পারে? এর সমাধান কী??

প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১০,০০০ নবজাতক এক বিশেষ রোগে মারা যেত এবং আরও অনেকেই মস্তিষ্কের ক্ষতির শিকার হতো। তবে ১৯৬০-এর দশকে একটি ওষুধ আবিষ্কারের ফলে এই সমস্যা প্রায় সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছিল। এই ওষুধের নাম রোগাম, যা মূলত এক ধরনের প্রতিষেধক যা মা ও শিশুর রক্তের অমিলের কারণে সৃষ্ট রোগ প্রতিরোধ করে।

মানুষের রক্তের বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে – টাইপ O, টাইপ A, টাইপ B, এবং টাইপ AB। এছাড়া, রক্তের গ্রুপের পরে একটি পজিটিভ বা নেগেটিভ চিহ্ন থাকে, যা RHD অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি নির্দেশ করে। যদি এই অ্যান্টিজেন থাকে, তাহলে রক্ত পজিটিভ এবং না থাকলে নেগেটিভ হিসেবে চিহ্নিত হয়।

যদি কোনো Rh নেগেটিভ মা Rh পজিটিভ শিশুর জন্ম দেন, তাহলে শিশুর রক্তের অ্যান্টিজেন মায়ের শরীরে প্রবেশ করলে মায়ের শরীর এটিকে বহিরাগত উপাদান হিসেবে গণ্য করে এবং এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। প্রথম শিশুর ক্ষেত্রে এটি সমস্যা না হলেও পরবর্তীতে Rh পজিটিভ শিশু জন্মালে মায়ের তৈরি অ্যান্টিবডি গর্ভের শিশুর রক্তকোষ আক্রমণ করে। এর ফলে হেমোলাইটিক ডিজিজ অব দ্য ফিটাস এবং নিউবর্ন (HDFN) রোগ হতে পারে, যা শিশুর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

১৯৪১ সালে এই রোগের কারণ আবিষ্কৃত হয় এবং ১৯৬০-এর দশকে গবেষকরা বুঝতে পারেন যে, Rh নেগেটিভ মায়েদেরকে এন্টি-ডি অ্যান্টিবডি দেওয়ার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এই ওষুধটি রোগাম নামে পরিচিত এবং এটি গর্ভাবস্থায় একবার এবং প্রসবের পর একবার দেওয়া হয়।

যদিও এই ওষুধটি অত্যন্ত কার্যকরী, তবুও কিছু মা ও শিশু এই প্রতিরোধ থেকে বঞ্চিত হয়। বিভিন্ন কারণে প্রায় ৫০% Rh নেগেটিভ মা গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের পরে এই ওষুধটি পান না। এর কারণগুলির মধ্যে রয়েছে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা না করা, উচ্চ খরচ, পর্যাপ্ত সরবরাহের অভাব, এবং চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত জ্ঞান ও যত্নের অভাব।

বর্তমানে, রোগামের ঘাটতি রয়েছে যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এফডিএর মতে, এটির কারণ হলো সক্রিয় উপাদানের ঘাটতি, উৎপাদন সমস্যা এবং প্ল্যান্ট রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন। এছাড়াও, চাহিদা বৃদ্ধির কারণে সরবরাহে চাপ পড়ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের প্রয়োজন মেটাতে চেষ্টা করছেন, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

এই সংকট শেষ হওয়ার পর, এই কার্যকরী চিকিৎসাটি সবার কাছে সহজলভ্য করার জন্য আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। যদি আপনি গর্ভবতী হন এবং Rh নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ থাকে, তাহলে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।

এখনকার মতো, আমাদের প্রতিটি রোগী ও শিশুর সুস্থতার জন্য সচেতন থাকা জরুরি।

[আরো পড়ুন:👉কেমন হয় প্রথম সন্তান! কেমনই বা দ্বিতীয়!? ‘জন্ম ক্রম এবং ব্যক্তিত্ব’: নতুন আলোচনার বিষয়!]

One response to “যদি কোনো Rh নেগেটিভ মা Rh পজিটিভ শিশুর জন্ম দেন! পরবর্তীতে কী সমস্যা হতে পারে? এর সমাধান কী??”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts